আদি পিতা হযরত আদম আ. থেকে এ পর্যন্ত যখনই কোন বাতিল আত্মপ্রকাশ করেছে তখনই দ্বীনের মুজাহিদগণ দৃঢ়ভাবে তার মোকাবেলা করেছেন। বাংলার জমিনে যখন নারী সমাজ পাশ্চাত্যের কালো থাবা ও সহশিক্ষার বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে ইসলামী তাহযীব-তামাদ্দুন কে ভুলে নারী স্বাধীনতার নামে বেহায়াপনা ও উলঙ্গপনার সয়লাবে ভেসে যাচ্ছিল, ঠিক সেই মূহূর্তে নারী সমাজকে রক্ষার জন্য জামালপুরের কৃতিসন্তান আলহাজ্ব মরহুম মৌলভী কুরবান আলী দরবেশ (রহঃ) এর স্মৃতিপটে উদ ভাসিত হয় যে, বর্তমান এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হলে এমন এক মহিলা শিক্ষালয় গড়ে তুলতে হবে, যেখান থেকে নারীজাতি দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিতা হয়ে শিরক, বিদ্আত ও কুসংস্কার মুক্ত একটি সভ্য ও শিক্ষিতা নারীজাতি সমাজকে উপহার দিবে এবং ইসলামের সঠিক দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌঁছে দিবে । যার ফলে আল্লাহ প্রদত্ব হুকুম-আহকাম ও নবী কারীম সা. এর ত্বরীকা প্রতিষ্ঠিত হবে নারী সমাজে। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে ১৯৭৫ সালে ইলমে দ্বীন ও আধ্যাতিক জ্ঞান অর্জনের জন্য হিজরতে গেলেন ভারতের সাহরানপুরে। সেখানে হযরত জাকারীয়া (রহঃ) এর খেদমতে কাটালেন কয়েক বছর, ধীরে ধীরে উস্তাদজীর খুবই প্রিয় হয়ে উঠলেন তিনি। উস্তাদজী খুশি হয়ে উপাধী দিলেন মুসাল্লিয়াতে তাহাজ্জুদ, অবশেষে হুজুরের পরামর্শক্রমে ১৯৭৯ সালের শেষের দিকে তৎকালীন ক্যান্টনমেন্ট থানার আওতাধীন ভাষানটেক এলাকায় এসে কতিপয় বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সহযোগীতায় বয়স্ক মহিলাদের দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন, যা পরবর্তিতে জামিয়া কুরবানিয়া তা'লীমিয়া মহিলা মাদ্রাসা (তা'লীম ঘর) নামে পরিচিতি লাভ করে। তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকার মিরপুর সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ২৫টি মহিলা মাদরাসা ও ১১ টি ছেলেদের কওমী মাদরাসা সহ ৯টি মসজিদ নির্মাণ করেন তিনি, তার প্রতিষ্ঠিত মাদরাসা সমূহ বহু ঘাত-প্রতিঘাত পাড়ি দিয়ে আজ ইসলামী সভ্যতার ধারক-বাহক হয়ে জাতির মাঝে স্ব-গৌরবে মহিলা সমাজকে সঠিক পথের সন্ধান দিচ্ছে এবং ইসলামী ভাবধারাকে দিক-দিগন্তে বিকশিত করার মহান দায়ীত্ব বিরামহীন ভাবে পালন করে চলেছে